ডায়াবেটিস আর হার্টের সমস্যা, হাত ধরাধরি করে চলে দুটোই! কিভাবে সাবধান হবেন ?
আপনি কি ডায়াবেটিসের রোগী কিংবা আপনি কি প্রিডায়াবেটিস স্টেজে রয়েছেন? তাহলে সাবধান! একটা কথা মাথায় রাখবেন যে, ডায়াবেটিস কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিকে অনেকখানিই বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা বাড়তে থাকে। অনেক সময় এই হার্ট অ্যাটাক যন্ত্রণাহীন ও হয়, রোগী কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগা কোন রোগী শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।
বহুক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, ডায়াবেটিস রোগীদের হাত পা ঠিকমত কাজ করছে না। শুধু তাই নয়, হাঁটাচলা করার ক্ষেত্রে হাত ধরে যাওয়ার মত সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। এমনকি অনেকেই রাত্রে শোয়ার পরে ঘেমেও যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে একটা কথা কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এইসব সমস্যা গুলো কিন্তু হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে। তাই সময় থাকতে থাকতে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিস ধরা পড়লে প্রথমেই খেয়াল রাখা উচিত, সন্ধ্যার দিকে রোগীর পায়ের পাতা ফুলছে কিনা। সমস্যা দেখা দিলে গোড়াতেই চিকিৎসকের সাহায্য নিন।
এই নিরব মারণব্যাধি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে, সঠিক চিকিৎসা ও নিয়ম মেনে চললে হার্টকে বড়সড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখা দরকার, ডায়াবেটিস-জনিত হার্টের অসুখের নাম ‘ডায়াবেটিক কার্ডিয়োমায়োপ্যাথি’। ডায়াবেটিস রোগীদেরই হার্টে ব্লক, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিয়োরের মতো সমস্যা বেশি হয়। ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে ‘অ্যাথেরোসক্লেরোসিস’ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। সেই জন্যেই চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ছে, না কমছে সেটা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে ডায়াবিটিসের রোগীদের। হার্টের নানা পরিীক্ষার মধ্যে ইসিজি, ইকোকার্ডিয়োগ্রাফি, লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করিয়ে কোনো ডাক্তার কে দেখিয়ে রাখা ভাল।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, রক্তে গ্লূকোজের মাত্রা স্বাভাবিক থাকা রোগীর তুলনায় প্রিডায়াবেটিসে থাকা রোগীর হার্ট অ্যাটাক নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১.৭ গুণ বেশি। তাই, চিকিৎসকদের পরামর্শ, সঠিক সময়ে ইনসুলিন নিতে হবে এবং শর্করা জাতীয় খাবার কমই খেতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যারা সুগারের ওষুধ খাচ্ছেন বা ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিচ্ছেন, তারা ভুল করেও ধূমপান বা মদ্যপান করবেন না। স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা ট্রান্স ফ্যাট যুক্ত খাবার খাওয়া চলবে না। পরিশেষে একটাই কথা বলার, নিয়মিত শরীরচর্চা, রোজ যথেষ্ট শাকসব্জি খেয়ে ওজন ঠিক রাখলেই প্রিডায়াবেটিস অবস্থা থেকে পুনরায় একজন ব্যক্তির ডায়াবেটিসহীন অবস্থায় পৌঁছনো সম্ভব!